Breaking Ticker

Ekadashi কি ? কিভাবে Ekadashi পালন করা উচিত ?

নমস্কার, sanatan sikkha তে আপনাদের স্বাগত। আজকের পোস্টে আমি Ekadashi নিয়ে মোটামুটি সমস্ত ধরনের প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব। (Ekadashi কি এবং কিভাবে Ekadashi পালন করা উচিত) এইসব প্রশ্নের উত্তর তো থাকবেই, সঙ্গে থাকবে এর পাশাপাশি আরো অনেক ধরনের আলোচনা। সুতরাং আজকের পোস্টটি পড়ার জন্য আপনারা একটু সময় নিয়ে বসবেন। কারন এই পোস্টে একাদশী সম্পর্কে অনেক কিছু আলোচনা হতে চলেছে। চলুন তাহলে শুরু করি...


পোস্টটিতে রয়েছে :

একাদশী কি ?

কিভাবে একাদশী পালন করবেন ?

কি কি খাওয়া যাবে আর কি কি খাওয়া যাবে না।

কিভাবে Ekadashi করলে বেশি ফল লাভ হয়

কি কি করা যাবে আর কি কি করা যাবে না ?


Ekadashi
Ekadashi

Ekadashi কি :

Ekadashi মানে পুণ্য অর্জন করার দিন। ভগবান বদ্ধ জীবের প্রতি কৃপা করার ইচ্ছায় একাদশীর মাধ্যমে মুক্তি লাভের পথ দেখিয়েছেন। এই দিন আহারে তথা পঞ্চশস্যে পাপ পুরুষ অবস্থান করেন। তাই একাদশীতে উপবাস করা উচিত। উপবাসের উপ কথাটির অর্থ 'নিকটে' আর বাস কথাটির অর্থ' অর্থাৎ ভগবানের নিকটে অবস্থান করাই হলো একাদশীর উপবাস। তাই একাদশীর উপবাসকে হরিবাসর তিথিও বলা হয়ে থাকে। Ekadashi মানে শুধু কেবল না খেয়ে থাকা নয়, বরং একাদশ ইন্দ্রিয় তথা ৫ জ্ঞানেন্দ্রিয় ৫কর্মেন্দ্রিয় এবং মন দিয়ে ভগবানের সেবা করা।


কিভাবে Ekadashi পালন করা উচিত :

Ekadashi করতে যারা সামর্থ তারা দশমীতে একাহার, একাদশীতে নিরাহার, এবং দ্বাদশীতে একাহার করবেন। এবং অসামর্থরা একাদশীর দিন নিরাহারে থাকবেন। তাতেও যদি তারা না পারেন তাহলে একাদশীর দিন তারা ফলমুলাদি গ্রহণ করতে পারেন। আর যারা পারেন তারা একাদশীতে রাত্রি জাগবেন ও একাদশীর দিন জল গ্রহন করা ছাড়া থাকার চেষ্টা করবেন। এইরকম করতে পারলে সর্বশ্রেষ্ঠ হয়। নিরন্তর কৃষ্ণ ভাবনায় থেকে নিরাহারে আর নির্জলা উপবাস করতে যদি না পারেন তাহলে সব্জি, ফলমুলাদি গ্রহন করতে পারেন।


Ekadashi তে কি কি খাওয়া যাবে আর কি কি খাওয়া যাবেনা :

Ekadashi তে আপনারা সব্জি সেবা করতে পারেন যেমন : গোল আলু, মিষ্টি আলু, ফুলকপি, চালকুমড়া ইত্যাদি সব্জি ঘি অথবা বাদাম তেল দিয়ে রান্না করে ভগবানকে উৎসর্গ করে তার সেবা করতে পারেন। সিন্দুক লবন সেবা করা যাবে।


আবার Ekadashi তে আপনারা ফলমুলাদিও সেবা করতে পারেন যেমন : দুধ, কলা, আপেল, আঙ্গুর, তরমুজ, বেল, মিষ্টি আলু,  বাদাম ও লেবুর শরবত ইত্যাদি সেবা করতে পারবেন।


Ekadashi তে পঞ্চ রবিশস্য একেবারেই সেবা করা নিষেধ। কারন একাদশীর দিন পঞ্চ রবিশস্যে পাপ পুরুষ অবস্থান করে থাকেন। পঞ্চ রবিশস্য বলতে ধান, গম, জব বা ভুট্টা, ডাল এবং তেলকে বোঝায়। এই সব শস্য থেকে যেই সমস্ত খাবার তৈরি করা হয়, একাদশীতে সেই সমস্ত খাবারকে বর্জন করতে বলা হয়েছে। যেমন : ভাত, চিড়া, মুড়ি, চালের পিঠা, পায়েস, খিচুড়ি, সুজি, আটা, ময়দা, বিস্কুট, হরলিক্স, ছাতু, খৈ, যে কোনো ধরনের ডাল, সরিষার তেল, তিল ইত্যাদি।


যারা যারা নেশা করেন অর্থাৎ চা পান বিড়ি সিগারেট খাওয়া ছাড়া থাকতে পারেন না, তাদের কেউ একাদশের দিন এই সমস্ত নেশাগ্রস্ত  খাবার থেকে বঞ্চিত থাকতে বলা হয়েছে। মনে রাখবেন, একাদশীর দিন এদের মধ্যে যেকোনো একটি খাদ্য সেবা করলেই একাদশীর ব্রত নষ্ট হয়ে যাবে। মানে একাদশী করা আর না করা সমান হয়ে যাবে।


বৈষ্ণব সেবা দিলে কি ফল লাভ হয়

কিভাবে মহাপ্রসাদ পুরীতে এসেছে

কৃষ্ণ নামের মহিমা কি 


কিভাবে Ekadashi করলে বেশি ফল লাভ হয় :

Ekadashi করলে যে শুধুমাত্র নিজের সৎগতি হয় তা নয়। একাদশীর ব্রত পালন করা ছাড়া যেই সমস্ত মাতা পিতারা নরকবাসী হয়েছেন, তাদের পুত্ররা একাদশীর ব্রত পালন করে তাদের মাতা পিতাকে নরক থেকে উদ্ধার করতে পারেন। একাদশীর দিন অন্ন ভোজন করলে যেমন নরকবাসি হতে হয়, ঠিক তেমনই অন্ন ভোজন করালেও নরকবাসি হতে হয়।


একাদশীর পারন অর্থাৎ একাদশী তিথির পরের দিন উপবাস ভঙ্গ করার নিয়ম হয়ে থাকে। পঞ্জিকাতে Ekadashi পারনের সময় দেওয়া থাকে। সেই সময়ের মধ্যেই পঞ্চশস্য দিয়ে তৈরী কোনো খাদ্য দিয়ে ভগবানকে নিবেদন করে সেই প্রসাদ সেবা করে একাদশীর উপবাস ভঙ্গ করতে হয়। নাহলে একাদশীর কোনো ফল লাভ হয় না।


Ekadashi তে কি কি করা যাবে আর কি কি করা যাবে না :

Ekadashi র দিন নিরন্তর ভগবানকে স্মরন করা, তার কীর্তন করা এবং তার কথা শ্রবন করা উচিত। মনে রাখবেন একাদশী পালনের দিন পরনিন্দা, পরচর্চা, ক্রোধ, দুরাচার, মিথ্যা ভাষন ও স্ত্রী সহবাস একেবারেই নিষিদ্ধ।


Ekadashi তিথির আগের দিন রাত্রি বারোটার আগেই অন্ন সেবা করে ভালো করে দাঁত ব্রাশ করে মুখ ধুয়ে নিবেন। যাতে কোন প্রকারের অন্ন দাঁতে বা মুখে লেগে না থাকে। মনে রাখবেন একাদশীর দিন শরীরে বা মাথায় তেল, সাবান বা শ্যাম্পু ব্যবহার করা যাবে না। দাঁত ব্রাশ করা যাবে না। এই দিন চুল, দাড়ি বা নখ কাটা একেবারেই নিষিদ্ধ।


যদি Ekadashi র দিন আপনারা সব্জি বা ফলমুলাদি সেবা করতে চান তাহলে করতে পারেন। কিন্তু মনে রাখবেন, সবজি বা ফল কাটার সময় যেন হাত কেটে না যায়। কারন একাদশীর দিন রক্ত পড়া অশুভ। আর সবজি রান্না করার সময় ফোঁড়ন দেওয়া চলবে না। কারন পাঁচ ফোড়নে দানাশস্য থাকতে পারে।


উপসংহার :

আপনি যদি সকল পাপ হতে মুক্ত হতে চান তাহলে প্রতিটি Ekadashi অবশ্যই পালন করবেন। মনে কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করবেন। ভালো থাকবেন। ইতি আপনাদের সেবক sanatan sikkha।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.